ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ, ভাইরাস প্রতিকার, ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়া,
1 min read

ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ, ভাইরাস প্রতিকার, ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়া,

ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণঃ

অন্যান্য রোগ বালাইয়ের মত ভাইরাস সংক্রমনেরও নির্দিষ্ট কিছু উপসর্গ রয়েছে। পিসির সাথে ঘণিষ্ঠ একজন ব্যবহারকারী অনুভব করতে পারে কখন পিসিটি সুস্থভাবে কাজ করছে না। ভাইরাস আক্রান্ত পিসির স্বাভাবিক কার্যক্রম হের-ফের হতে দেখা যায়। সেই বিষয় নিয়ে নিম্নে কিছু লক্ষণ আলোচনা করা হলোঃ

  • কম্পিউটার চালু হতে আগের চেয়ে বেশি সময় লাগে বা লাগছে।
  • EXE এবং COM ফাইলের আকার বড় হয়ে যাওয়া।
  • হঠাৎ করে ফাইল উধাও হয়ে যায় অথবা নাম পরিবর্তিত হয়ে যায়।
  • পর্দায় অদ্ভুত বা হাস্যকর বার্তা বা চিত্র পরিলক্ষিত হওয়া।
  • অস্বাভাবিক এরর সংকেত প্রদর্শন করা। যেমন- Write Protect error on drive D:
  • ডিস্কে বেড সেক্টর বেড়ে যাওয়া। কারণ কিছু কিছু ভাইরাস নিজেদেরকে লুকানোর জন্য তাদের অবস্থানকে বেড সেক্টর হিসেবে মার্ক করে দেয়। যাতে অপারেটিং সিস্টেম অথবা অন্য কোন প্রোগ্রাম সেখানে ঢুকতে না পারে।
  • সাধারণ কাজেও ডিস্ক একসিস সময় বেড়ে যাওয়া।
  • ফাইল সেভ করা বা প্রিন্ট করাতে অনেক সময় নেয়া।
  • মেমোরীর সাইজ কমিয়ে কোন প্রোগ্রাম চালনায় ব্যহত করা। যেমন- Out of Memory অথবা Insufficient Memory বার্তা প্রদর্শিত হওয়া।
  • অযৌক্তিভাবে ডিস্কের ফাঁকা স্থান কমে যাওয়া।
  • এ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামগুলো ক্রটির সম্মুখীন হওয়া।
  • কম্পিউটার কার্যক্রম ধীর হয়ে পড়া।
  • অকারণে ডিসস্ক একসিস হওয়া।

ভাইরাস প্রতিকারঃ

প্রতিদিন সারা বিশ্বে অনেক নতুন নতুন ভাইরাস তৈরি হচ্ছে। এসব ভাইরাস পৃথিবীর সর্বত্র দ্রুত ছড়িয়ে যাচ্ছে। তাই বাস্তবে দেখা যায় অনেকদিন ধরে কম্পিউটার ব্যবহার করছেন অথচ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া ভার। ভাইরাসে আক্রান্ত হলে হতাশ হওয়ার কিছুই নেই। সব সমস্যারই সমাধান রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে আপনার গাফলাতির জন্য হয়তো সমাধানের সাথে চরম মূল্যও দিতে হবে। ভাইরাস সংক্রামনের ব্যাপারে নিশ্চিত হলে সাথে সাথে কাজ বন্ধ করে খুব দ্রুত সংক্রামণ মুক্ত হওয়ার কাজে নেমে পড়তে হবে। একাজে যত বিলম্ব করবেন সংক্রামন ততো বেশি ছড়াবে। এক সময় হয়তো আপনার মূল্যবান প্রয়োজনীয় ডেটা না হারিয়ে সংক্রামণ মুক্ত হওয়া অসম্ভব হয়ে উঠবে। ভাইরাস সংক্রমিত হলে কি কি করা উচিতঃ

1. ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার লক্ষণ দেখা দিলে কম্পিউটারের আর কাজ না করে কম্পিউটার বন্ধ করতে হবে। লেটেস্টে কোন Anti-Virus চালনা করে ভাইরাস স্ক্যান করতে হবে।

2. ভাইরাসে আক্রান্ত কম্পিউটারে যদি অতি প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট থঅকে এবং ভাইরাসের যদি ভয়াবহ হয় অর্থাৎ এন্টিভাইরাস দিয়েও নিশ্চিতভাবে স্ক্যান করা সম্ভব না হয়। তাহলে, একটি মাত্র পথ খোলা আছে আর তাহলো হার্ডডিস্ক ফরম্যাট করা। এক্ষত্রে মূল্যবান তথ্য না হারিয়ে ফরম্যাট করার জন্য নিচের পদ্ধতিগুলো অনুসরন করতে পারেন।

  • কম্পিউটার বন্ধ করা
  • ড্রাইভে ডিস্ক থাকলে বের করে ঢেলুন।
  • সব এক্রটারনাল সংযোগ (যেমনঃ- প্রিন্টার, মডেম, স্ক্যানার ইত্যাদি) বিচ্ছিন্ন করুন।
  • একটি ভালোমানের ফ্লাশ ড্রাইভ বা পেন ড্রাইভ কমিউপটারের সাথে সংযোগ স্থাপন করুন।
  • এবার কম্পিউটার চালু করুন এবং আপনার প্রয়োজনীয় ফাইলগুলো পেনড্রাইভে কপি করুন।
  • কপি করা পেনড্রাইভটি অন্য কম্পিউটারের এন্টিভাইরাস দ্বারা ডিপ স্ক্যান করে নিন।
  • এবার আপনার আক্রান্ত কম্পিউটারটির সম্পূর্ণ হার্ডডিস্ক ফরম্যাট করে, নতুন করে অপারেটিং সিস্টেম ইন্সটল করুন। অপারেটিং সিস্টেম ইন্সটল দেওয়া পরে। আপনার কম্পিউটারে ভালোমানের একটি এন্টিভাইরাস ইন্সটল করে ডিপ স্ক্যান করা ফাইলগুলো আপনার কম্পিউটারের স্থানান্তর করতে পারেন।

ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়া

ভাইরাস আক্রান্ত হলে আপনি হয়তো ভাইরাস নিধন করে পিসিটিকে পুনরায় কার্যপযোগী করে তুলতে পারেন। কিন্তু তাতে করে আপনার মূল্যবান অনেক সময় নষ্ট ছাড়াও প্রয়োজনীয় অতি মূল্যবান প্রোগ্রাম বা তথ্যও হারিয়ে যেতে পারে। ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে “Prevention is always better than cure” অর্থাৎ প্রতিরোধ সব সময় প্রতিকারের চেয়ে উত্তম। তাই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রতিকারের চেয়ে আক্রান্ত না হওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। কম্পিউটার ভাইরাস থেকে পিসিকে সুরক্ষিত রাখা খুব কঠিন কাজ নয়। সাধারণ কিছু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং পূর্ব সতর্কতা আপনার প্রিয় কম্পিউটারটি ভাইরাস নামক শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করবে। তাই কিভাবে পিসিকে ভাইরাস প্রতিরোধি করবেন।

১.  প্রথমত অরিজিনা অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করুন। কারন ৪০%-৫০% পিসি কপি অপারেটিং সিস্টেম থেকে ছড়ায়।

২. একান্ত প্রয়োজন না হলে বাহিরের কোন ধরনের পেনড্রাইভ, সিডি, ডিভিডি বা অন্যকোন মাধ্য কম্পিউটারের সাথে ব্যবহার করবেন না। মনে রাখবেন বেশির ভাই ভাইরাস এসবের মাধ্যমে ছড়ায়।ৎ

৩. বিশেষ প্রয়োজনে বাহিরের ডিস্ক বা ড্রাইভ ব্যবহার করার আগে কম্পিউটারের এন্টিভাইরাস আপডেট করে নিন এবং ডিস্কটি স্ক্যান করে নিন।

৪. সব সময় এন্টিভাইরাসের আপডেট সফটওয়্যার ব্যবহার করুন। তবেিআপনি যদি বৈধ ব্যবহারকারী হন অর্থাৎ অরজিনাল এন্টিভাইরাস ক্রেতা হন। তাহলে প্রতিমাসে বা তিনমাস অন্তর অন্তর ব্যবহৃত এন্টিভাইরাস আপডেটেড ভার্সন বিনামূল্যে পাবেন। অন্যান্য ফ্রি এন্টিভাইরাস ব্যবহার করা হতে দুরে থাকুন।

৫. প্রতিদিন কাজের শেষে প্রয়োজনীয় ডেটার ব্যাকআপ রাখুন।

৬. অধিকাংশ ভাইরাস সাধারণত .com ও .exe ফাইলকে আক্রান্ত করে থাকে। তাই সব প্রোগ্রামের .com ও .exe ফাইলকে Read only করে রাখুন।

৭. মাঝে মাঝে এন্টিভাইরাস দিয়ে স্ক্যান দিন।

৮. মাইক্রোসফট অফিস ওয়ার্ডের ম্যাক্রো Disable করে চালু করুন। ডকুমেন্টসমূহ Rich text Format এ সেভ করে আদান-প্রদান করুন।

৯. ইন্টারনেট ব্যবহারে সর্তক হবে। অতিপ্রয়োজনীয় না হলে, ইন্টারনেট থেকে ফাইল ডাউনলোড করবেন না। অবশ্যই এক্ষেত্রেও ভাইরাস স্ক্যনিং করে নিন।

১০. অযথা অপ্রয়োজনীয় ফ্রি সফটওয়্যার প্রাপ্তির সুযোগ কিংবা ডেমো সফটওয়্যার পাওয়ার বিরল সুযোগ ব্যবহার না করাই ভালো।

১১. কম্পিউটার স্টার্টআপে ভাইরাস গার্ড ব্যবহার করুন।

১২. পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহারে সতর্ক থাকুন। অনেক কোম্পানী তাদের সফটওয়্যার পাইরেসী রোধ করার জন্য ভাইরাস দিয়ে রাখে। শুধুমাত্র মূল সফটওয়্যারের পাইরেসী করলে এসব ভাইরাস কার্যকরী হয়ে ছড়ায়।